গরমে ত্বকের যত্ন নিন !
শীতে যেমন ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়, গ্রীষ্মের গরমেও ত্বক আর্দ্রতা হারায়। তাছাড়া এই সময় রোদেপোড়া, ব্রণ, ফুস্কুড়ি ইত্যাদির সমস্যাও বেড়ে যায়।
আজকের এই লেখায় গরমে ত্বকের বিশেষ যত্নে বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়।
ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখুন
গরমে ত্বক থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি বের হয়ে যায়। তাই ত্বকও আর্দ্রতা হারায়। এই আবহাওয়ায় প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। পানি ও প্রচুর পানিজাতীয় খাবার-ফলমূল খেতে হবে এই গ্রীষ্মে ত্বক সতেজ রাখতে।
রোদ থেকে সুরক্ষা
গ্রীষ্মে সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত যতটা সম্ভব রোদ এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ এই সময়ে সূর্যের তাপ সব থেকে প্রখর থাকে। তাছাড়া এই ঋতুতে ঘর থেকে বের হওয়ার ২০ থেকে ৩০ মিনিট আগে পুরো মুখে ও যে অংশগুলোতে রোদ লাগতে পারে সেখানে সানস্ক্রিন লাগিয়ে নিতে হবে। দীর্ঘ সময় বাইরে থাকলে দিনে একাধিকবার সানস্ক্রিন লাগিয়ে নিতে হবে।
টোনার ব্যবহার
গরমে ত্বকের লোমকূপ বন্ধ রাখা খুবই জরুরি। তাই প্রতিদিন নিয়ম করে টোনার ব্যবহার করতে হবে। টোনার লোমকূপ সংকোচিত করার পাশাপাশি ত্বক ঠাণ্ডা রাখতেও সাহায্য করে। ত্বকের সঙ্গে মানিয়ে টোনার ব্যবহার করলে গ্রীষ্মে উপকার পাওয়া যায়। তবে টোনারের বদলে চাইলে গোলাপ জলও ব্যবহার করা যেতে পারে।
ওয়াটার-বেইস ময়েশ্চারাইজার
অনেকে মনে করেন গরমে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার না করলেও চলবে। তবে গরমে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রেখে ত্বক কোমল রাখতে ময়েশ্চারাইজার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর গ্রীষ্মে ত্বক তৈলাক্ত হয়ে যাওয়ার সমস্যা এড়াতে ‘ওয়াটার-বেইস’ ময়েশ্চারাইজার বেছে নিতে হবে।
এড়িয়ে চলুন কোমল পানীয়
গ্রীষ্মে বরফ শীতল কোমল পানীয় অনেকেরই দারুণ পছন্দ। তবে কোমল পানীয়তে থাকে প্রচুর পরিমাণে চিনি, যা ত্বক ও স্বাস্থ্য দুইয়ের জন্যই ক্ষতিকর।
গরমে পিপাসা মেটাতে পানি, লেবুর শরবত, কাঁচাআমের শরবত, ডাবের পানি বা বিশুদ্ধ ফলের রস খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে হবে। এতে শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পাবে এবং প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা বজায় থাকবে। গরমে অ্যালকোহল এবং ক্যাফেইন যুক্ত পানীয়ও এড়িয়ে চলতে হবে।
দিনে দু’বার ত্বক পরিষ্কার করতে হবে
সারাদিন ঘরে বসে থাকলেও দিনে অন্তত দু’বার ত্বক পরিষ্কার করা প্রয়োজন এই মৌসুমে। ঘুমাতে যাওয়ার আগে ত্বক পরিষ্কার করে পর্যাপ্ত পরিমাণে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি।
এক্সফলিয়েট
গরমের সময় ত্বকের মৃত কোষ দূর করে রক্ত চলাচল বৃদ্ধিতে এক্সফলিয়েট করা অত্যন্ত জরুরি। বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্ক্রাব বেশ সহজলভ্য। সেখান থেকে ত্বকের সঙ্গে মানানসই একটি মাস্ক বেছে নেওয়া যেতে পারে বা চাইলে নিজেই ঘরে তৈরি করা যেতে পারে এক্সফলিয়েট করার স্ক্রাব।
স্ক্রাব তৈরি করতে চার থেকে পাঁচ টেবিল চামচ ময়দা, এক চিমটি হলুদগুঁড়া, কয়েক ফোঁটা গোলাপ জল ও দুধ বা দই একসঙ্গে মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। এটি দিয়ে ত্বক স্ক্রাব করলে উপকার পাওয়া যাবে।
রোদে পোড়াত্বকের যত্ন
গ্রীষ্মে ত্বকে রোদেপোড়া ছাপ পড়বে না, তা কি হয়! তবে ঘরোয়া পরিচর্যায় রোদেপোড়া ত্বক থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ময়দা, দই ও কয়েক ফোঁটা লেবুর রসের মিশ্রণে তৈরি মাস্ক ‘সান ট্যান’ দূর করতে দারুণ উপকারী। রোদে পোড়াভাব দূর করে ত্বক উজ্জ্বল করতে লেবুর রস দারুণ কার্যকরী।
গরমেও উজ্জ্বল ত্বক
গরমে ত্বকচর্চায় দারুণ উপকারি পেঁপে। দুই টেবিল-চামচ পেঁপে ভর্তা, এক চা-চামচ মধু ও একটি ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে প্যাকটি মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই প্যাক ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করবে।
ত্বক শীতল রাখুন
অর্ধেক শসা ও এক টেবিল-চামচ দই একসঙ্গে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। এই প্যাক গরমে ত্বক শীতল করতে সাহায্য করবে। ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলতে হবে।