ভালোবাসা দিবসে সাজতে কিছু টিপস!

ভালোবাসা দিবসে নিজেকে সুন্দর করে সাজাতে প্রথমে চুল ধুয়ে কন্ডিশন করে নিন। খোলা চুলে ওয়েভ কার্ল, স্পাইরাল করে নিতে পারেন। চাইলে কপাল ঘেঁষে চিকন বেণি করে নিতে পারেন। পনিটেইল, ফ্রেঞ্চ বেণিও ভালো লাগবে। যারা শাড়ি পরবেন, তারা হাতখোঁপা করে নিতে পারেন। হরেক রকম চুলের কাঁটা গুঁজে খোঁপায় তুলুন নতুন ছন্দ। খেয়াল রাখবেন, চুল যেন সব সময় পরিষ্কার ও টিপটপ দেখায়। ব্যাগে পাঞ্চ ক্লিপ ও ব্রাশ রাখবেন।

ভালোবাসা দিবসের মেকআপে চোখের সাজকে প্রাধান্য দিন। মুখের মেকআপ হবে হালকা। প্রথমে মুখে পাঁচ মিনিট আগে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে ত্বক নরম করে নিন। তারপর ফোঁটা ফোঁটা স্টিক ফাউন্ডেশন লাগিয়ে ভালোমতো মাখুন। হালকা ফেস পাউডার লাগান, তার ওপর পিচ কিংবা গোলাপি ব্লাশন বুলিয়ে নিন। হয়ে গেল সারা দিনের মেকআপ বেজ। চোখে স্মোকি সাজই চলছে এখন। তবে স্মোকি মানেই কালো নয়, তাতে যোগ হয়েছে হরেক রং। প্রথমে পানিরোধক কাজল চোখে টেনে নিন। শুধু কাজলরেখা ঘেঁষে সবুজ, বাদামি মেশান। নিচের পাতার ভেতরের অংশে ঘন কাজল দিয়ে নিচে বাদামি শ্যাডো টানুন। পাপড়িতে ঘন করে মাশকারা দিন। পুরো পাতায় শ্যাডো দিতে চাইলে কাজলের বদলে মোটা করে লাইনার টানুন। আর রাতের জন্য চোখে যেকোনো শ্যাডো পরতে পারেন। সে ক্ষেত্রে হাইলাইট হতে পারে সোনালি, বাদামি, রুপালি, পার্ল, তামাটে রঙের। চোখের কোণে একটু কালো শ্যাডো মিশিয়ে নিলেই গভীর হবে আপনার চোখের ভাষা। লেন্স পরতে পারেন। ত্বক বাদামি বা শ্যামলা হলে হ্যাজেল, বাদামি লেন্স ভালো মানাবে। ফরসা হলে বেছে নিন ছাই, নীল বা সবুজ রং। দিন হোক আর রাত, লাল, কমলা কিংবা অন্য উজ্জ্বল রং আপনি বেছে নিতে পারেন।’ 

টিপসঃ

–সকালে গোসল শেষে স্বাভাবিক ভাবে চুল শুকিয়ে নিন। চোখের পাতা ফোলা-ফোলা লাগলে (কোনো অসুখের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়) একটি স্টিলের চা চামচ ৪/৫ মিনিটের জন্য ফ্রিজে রেখে দিন। এরপর বের করে এই ঠাণ্ডা চামচ চোখ বন্ করে চোখের উপরে রেখে দিন, ফোলা ও চোখ লাল হওয়া কমে যাবে।

–চকচকে, উজ্জ্বল ত্বকের জন্য মাস্ক ব্যবহার করুন। ডিমের সাদা অংশ এবং মধু ভালোভাবে মিশিয়ে আপনার মুখে এবং গলায় লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে দিন। সাধারণ পানি দিয়ে হালকা ম্যাসাজ করে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটা আপনার মুখের রোদে পোড়া দাগ ও ত্বকের মরা কোষ দূর করবে। যখনই আপনি প্রয়োজন অনুভব করছেন তখনই ব্যবহার করুন ; তবে সাধারণত একদিন পর একদিন ব্যবহার করা যায়। এই তিন দিনই দিন শেষে বাসায় ফিরে এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন। 

–ওটমিলের সাথে মধু, টকদই এবং আমন্ড বাদাম মিশিয়ে একটি মিশ্রন তৈরি করে ত্বকে ব্যবহার করুন। ১০ মিনিট রেখে হালকা ঘষে উষ্ণ গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। প্রতিদিন ঘুমাতে যাবার আগে এই মিশ্রণটি ব্যবহার করলে এই ঠাণ্ডা-ঠাণ্ডা আবহাওয়াতেও আপনার ত্বক থাকবে প্রশান্তিতে এবং আপনার ত্বকের জেল্লা বৃদ্ধি পাবে।

–আঙুর, লেবুর রস এবং ডিমের সাদা অংশ দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। ২০ মিনিট মুখে রেখে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। লেবু ত্বক পরিষ্কার করবে, আঙুর নরম করবে, ডিমের সাদা অংশ ত্বককে টানটান করবে। মুখ যদি চুলকায় তাহলে ভয় পাবেন না। সপ্তাহে একবার মিশ্রণটি ব্যবহারে এই আবহাওয়াতেও আপনার ত্বক থাকবে নরম ও কোমল।

–গোসল শেষে এন্টি পারসপির্যান্ট ব্যবহার করুন। প্রয়োজনে হালকা সুগন্ধীও লাগাতে পারেন। 

–সপ্তাহে একবার ডিপ কন্ডিশনিং করুন। একটি ডিম ও দুই টেবিল চামচ মেয়োনিজ নিন। ডিমটা ভালোভাবে ফেটিয়ে নিন। চুল ভিজিয়ে পুরো ডিমটি ম্যাসাজ করে লাগিয়ে এক মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর উষ্ণ গরম পানিতে খুব ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। একই ভাবে মেয়োনিজটুকুও চুলে ম্যাসাজ করুন। এরপর মাথায় তোয়ালে পেচিয়ে সূর্যের আলোতে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে উষ্ণ গরম পানিতে খুব ভালোভাবে ধুয়ে শ্যাম্পু করে নিন। কন্ডিশনার ব্যবহার করার দরকার নেই। এই আবহাওয়ার পুরোটা সময় জুড়ে রুক্ষ, শুষ্ক ও ভঙ্গুর চুল এড়াতে নিয়মিত ব্যবহার করুন। 

–ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে যদি চুল না কেটেই চুলের স্টাইলে কিছুটা ভিন্নতা আনতে চান, তবে হেয়ার কালার করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। মুখের পাশের চুলে অল্প কিছু হালকা রঙের হাইলাইট করে নিলে আপনাকে আরো অনেক বেশি উজ্জ্বল ও ফর্সা দেখাবে।

ছোট চুলের স্টাইলের সাথে বড় ও কারুকাজ করা কানের দুলের আছে প্রাচীন বন্ধুতা। 

–চুল ধোয়ার জন্য চুলের ধরণ অনুযায়ী সঠিক শ্যাম্পুটি বেছে নিন। চুল ধোয়ার জন্য কখনোই গরম পানি ব্যবহার করবেন না। 

খুব বেশি বেশি বো-ড্রায়ার ব্যবহার ও বাতাসে চুল শুকানো এড়িয়ে যাবেন।

–এই দিনে শাড়ি পরলে চুল বেঁধেও রাখতে পারেন; আবার খোলাও রাখতে পারেন। খোলা রাখলে বো বা আয়রণ করার পর স্প্রে করে চুলকে ফিক্স করে নিবেন অথবা সুন্দর করে কার্লও করিয়ে নিতে পারেন। 

–দিনের বেলাতে হালকা করেই সাজুন। শাড়ির পাড়ের রঙের সাথে মিলিয়ে টিপ পরে নিন, হাতে পরে নিন ম্যাচিং করা কাচের চুড়ি। গলা ও কানে অ্যান্টিক, পাট, সুতা, বাঁশ এমনকি মাটির গহনাও পরতে পারেন। চটি স্যান্ডেল জোড়া বেছে নিলেই ভালো হবে। ব্যাগে রাখুন ময়েশ্চারাইজার, সানস্ক্রিন, ফেসিয়াল টিস্যু, এক বোতল পানি এবং আপনার প্রয়োজনীয় সব কসমেটিকস্।

ছোট করে চুল কাটলে অত্যাবশ্যকীয়ভাবে আপনার চোখ সবার নজর কাড়বে। তাই চোখের সাজে আনুন অনন্য ও উজ্জ্বল প্রভা। 

সামনের দিকে কাটা চুল যদি চোয়ালের হাড় পর্যন্ত আসে তাহলে ব্লাশন লাগানো একান্ত জরুরি এবং ঠোঁটের পাশ পর্যন্ত এলে দৃষ্টি নন্দন লিপস্টিক লাগান।

–লিপ-লাইনার খুব বেশি শুষ্ক হয়ে গেলে ব্লো-ড্রায়ারের গরম বাতাস অথবা জ্বলন্ত বাল্বের সামনে কিছুক্ষণ ধরুন; আবার যদি খুব নরম হয়ে ভঙ্গুর হয়ে যায়, কিছুটা সময় ফ্রিজে রেখে দিন।

পছন্দের গাঢ় রঙের লিপস্টিকটি ৩/৪ শেড হালকা করে লাগাতে চাইলে প্রথমে কন্সিলার পেন্সিল দিয়ে ঠোঁট ভরাট করে নিন। এর উপরে লিপস্টিক লাগান।

–ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে আপনি হেয়ার ট্রিটমেন্ট, ম্যানিকিউর, পেডিকিউর, হেয়ার কাট ইত্যাদি করাতে পারেন; কিন্তু নতুন কোনো ফেসিয়াল ট্রাই করবেন না।

ভালো থাকুন, সুস্থ, সুন্দর ও উজ্জ্বল থাকুন। পলাশ আর কৃষ্ণচূড়া ফুলও যেন আপনার রূপে মুগ্ধ হয়ে যায়। ঈর্ষায় জ্বলে পুড়ে ফুলগুলো যেন আগুন লাল হয়ে যায়। আপনার রূপ আর প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের মাঝে যেন কোনো তফাৎ খুঁজে না পাওয়া যায়।