ত্বক ও চুলের যত্নে টক দই এর ব্যবহার!!

সুন্দর চুল ও উজ্জ্বল কোমল ত্বক আমরা সবাই পেতে চাই।
চুলের যত্নে নানা রকম হেয়ার প্যাক ব্যবহার করে থাকি। এর মধ্যে মেহেদি প্যাক অন্যতম। মেহেদি প্যাক চুল পড়া রোধ করে প্রাকৃতিকভাবে এবং চুল কালার করে থাকে। যা দেখতেও অনেক সুন্দর লাগে। আরও একটি উপাদান আছে যার ব্যবহারে চুল নরম-কোমল করে, খুশকি রোধ করে আরো চুলকে মজবুত করে তুলতে সাহায্য করে। তা হল টক দই। টক দই এরগুনাগুন সম্পর্কে অনেকেই জানেন যে চুলের খুশকি দূর করার জন্য টক দই বেশ উপকারি। কিন্তু শুধু খুশকি দূর করা নয় চুলের আরও অনেক সমস্যা সমাধান করে দিতে পারে টক দই-এর হেয়ার প্যাক। তো চলুন জেনে নেই চুলের যত্নে টক দই এর হেয়ার প্যাকের গুনাগুন।

১। চুল নরম কোমল করতে

চুলের যত্নে টক দই অনেক উপকারি। আর এই প্যাকটি ব্যবহার করলে চুল নরম ও কোমল হয়। এই প্যাকটি করতে টক দই, নারকেল তেল এবং অ্যালোভেরার জেল একত্রে ভাল করে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর এই প্যাকটি চুলে ভালভাবে লাগাতে হবে। এরপর ১৫ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে। প্রাণহীন, নির্জীব, রুক্ষ চুলকে নরম, কোমল, এবং ময়োশ্চারাইজ করে তুলবে এই প্যাকটি। নিয়মিত ব্যবহারে এই প্যাকটি চুলের রুক্ষতা দ্রুত দূর করবে।

২। চুল পড়া রোধ করতে

চুল পড়া রোধ করতে এই প্যাক অনেক উপকারি। এই প্যাক তৈরি করতে ১/৪ কাপ মেথি গুঁড়োর সাথে ১ কাপ টক দই মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। তারপর মাথার তালুসহ সম্পূর্ণ চুলে এই প্যাকটি ব্যবহার করতে হবে। ২ ঘন্টা রেখে শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে। এটি সপ্তাহে এক বার ব্যবহার করলে চুল পড়া বন্ধ হবে। প্যাকটি চুল পড়া রোধ করতে অনেক সাহায্য করে।

৩। রুক্ষতা দূর করতে

রুক্ষতা দূর করতে এই প্যাক খুবই উপকারি। এই প্যাকটি করতে টকদই, বাদাম তেল এবং একটি ডিম ভাল করে মিশিয়ে নিয়ে তৈরি করতে হবে। এই প্যাকটি চুলের গোড়া থেকে সম্পূর্ণ চুলে ভাল করে লাগিয়ে রেখে। এরপর ৩০ মিনিট পর চুল শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে। ডিমের পুষ্টি এবং তেলে চুলের রুক্ষতা দূর করে দিয়ে চুল স্লিকি করে তোলে। সপ্তাহে ১বার অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে।

৪। খুশকি দূর করতে

মাথার তালুর রুক্ষতা বা খুশকি দূর করতে এই প্যাকটি বেশ কার্যকারি। তিন টেবিল চামচ অলিভ অয়েল টক দইয়ের সাথে ভাল করে মিশিয়ে প্যাকটি তৈরি করে নিতে হবে। এটি মাথার তালুতে ১০ মিনিট চক্রাকারে ম্যাসাজ করে লাগাতে হবে। এরপর ৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে। এই প্যাকটি সপ্তাহে দুই বার ব্যবহার করলে ভাল ফলাফল পাওয়া যাবে।

৫। খুশকি দূর করতে আরো একটি প্যাক

ক দই এবং গোলমরিচের গুড়ার এই প্যাকটি খুশকি দূর করতে অনেক বেশি কার্যকর। এই প্যাকটি করতে ৪টেবিল চামচ টক দই এবং ১চা চামচের ১/৪অংশ একত্রে মিশাতে হবে। তারপর চুলের গোড়ায় ভালভাবে লাগিয়ে রাখতে হবে। ৩০ থেকে ৪০ মিনিট রেখে চুলে শ্যাম্পু করতে হবে। দেখবেন খুশকি থেকে উপকার পাবেন। এভাবে নিয়মিত ব্যবহার করলে খুশকি চিরতরে চলে যাবে।

ত্বকের যত্নে টক দই এর কিছু কার্যকারী ফেসপ্যাক

চুলের যত্নে টক দই এর ব্যবহার অসাধারন থাকলে ত্বকের যত্নেও রয়েছে টক দইয়ের সমান ব্যবহার। চলুন জেনে নেওয়া জাক ত্বকের যত্নে টক দইয়ের ব্যবহার।

১. যাদের অমসৃণ ও রুক্ষ ত্বক তাদের মন খারাপ করার কিছু নেয়।কারন সেই সকলতকের জন্য টক দইখুব উপকার। এক কাপ টক দই ও দুটি কলা চটকে ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে। গোসলের আগে পুরো শরীরের ত্বকে লাগিয়ে নিতে হবে। এরপর ২০ মিনিট অপেক্ষা করে গোসল করে ফেলতে হবে। দেখবেন ত্বকের মসৃণতা দেখে বুঝবেন কত উপকার হয়েছে।

২. ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতেও দইয়ের জুড়ি নেই। টক দই, বেসন ও মধু মিশিয়ে নিতে হবে ভালো করে। মুখসহ পুরো শরীরের ত্বকে ব্যবহার করে। আধা ঘণ্টা পর ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলতে হবে। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের রং হবে আরো উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত।

৩. ত্বকের অবাঞ্ছিত লোম নিয়ে বিব্রত থাকেন অনেকেই। পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াবিহীন ভাবে এই অবাঞ্ছিত লোম দূরীকরণে সাহায্য করতে পারে দই। ১ টেবিল চামচ টক দই, ২ টেবিল চামচ ময়দা, ১ চা চামচ লেবুর রস ও ১ চিমটি হলুদ মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করতে হবে। তারপর ত্বকে পুরু করে প্রলেপ দিয়ে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এরপর পানি দিয়ে ভালো করে ঘষে ঘষে ধুয়ে ফেলতে হবে। সপ্তাহে ৩-৪ বার এই উপকরন ব্যবহার করতে হবে। এই মিশ্রণটি লোমের রং পরিবর্তন করে এবং লোম ওঠার পরিমাণ কমিয়ে দেবে।