ময়েশ্চারাইজার কতটা জরুরি !!

সুস্থ, সুন্দর ত্বকের জন্য খুবই দরকার ময়েশ্চারাইজিং। এতে ত্বক নরম ও মসৃণ থাকে। ত্বকের উজ্জ্বলতাও থাকে অটুট। তবে ময়েশ্চারাইজিং ব্যবহারের নিয়ম মেনে চলতে হয়। আর ত্বকের ধরন অনুযায়ী ব্যবহার করলে আপনি ফল পাবেন সহজেই। ময়েশ্চারাইজিং ব্যবহারের নিয়ম কানুন নিয়ে এবারের আয়োজন।

ময়েশ্চারাইজার কতটা জরুরি

* অতিরিক্ত রোদ বা গরম নানা কারণেই ত্বকের ময়েশ্চার নষ্ট হয়ে যায়। ত্বকের এই অতিরিক্ত শুষ্কতার প্রতিরোধ করার জন্য খুবই জরুরি ময়েশ্চারাইজার।

* ময়েশ্চারাইজার ত্বকে পানি ও তেলের ভারসাম্য বজায় রাখে।

* ওয়াটার-ইন-অয়েল ময়েশ্চারাইজার সাধারণত ওয়েল বেজড হয়ে থাকে। এ ধরনের ময়েশ্চারাইজার ত্বকের ময়েশ্চার ধরে রাখে। অতিরিক্ত গরমে বা ঠাণ্ডায় কিংবা ধুলোময়লা স্কিন সারফেসে এক ধরনের ট্র্যাপ তৈরি করে ত্বকের মধ্যে ময়েশ্চার ধরে রাখে।

* অয়েল-ইন-ওয়াটার ময়েশ্চারাইজারে সাধারণত গ্লিসারিনের মতো হিউম্যাকটেন্ট থাকে। হিউম্যাকটেন্ট ত্বকে জল ধরে রাখে। আবজর্ব করে। এই ময়েশ্চার ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে ত্বকের ময়েশ্চার বজায় রাখে।

কোন ত্বকে কী রকম ময়েশ্চারাইজার

* নিজের ত্বকের ধরন অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন।

* স্বাভাবিক ত্বকের জন্য ওয়াটার বেজড ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। ওয়াটার বেজড ময়েশ্চারাইজার অল্প পরিমাণে তেল রয়েছে।

* তৈলাক্ত ত্বকের জন্য আদর্শ অয়েল ফ্রি ময়েশ্চারাইজার। অয়েল ফ্রি ময়েশ্চারাইজারে ভেজিটেবল, অ্যানিম্যাল ফ্যাট বা মিনারেল অয়েল থাকে না।

* শুষ্ক ত্বকের জন্য ক্রিম বেসড ময়েশ্চারাইজার ভালো। গ্লিসারিন, ল্যাক্টিভ অ্যাসিড রয়েছে এ ধরনের ময়েশ্চারাইজারও ব্যবহার করতে পারেন। ত্বকের ময়েশ্চার বজায় রাখবে।

* মিশ্র ত্বকের জন্য ভালো লাইট হাইড্রেটিং ময়েশ্চারাইজার। দিনে দু’বার এই ময়েশ্চারাইজার দিন।

* সেনসিটিভ ত্বকের জন্য সুগন্ধিবিহীন ময়েশ্চারাইজার আদর্শ। সেনসিটিভ ত্বকের জন্য ভিটামিন-এ, সি, এবং ই, জিংক এবং গ্রিন টি-যুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।

* বলিরেখা সমন্বিত ত্বকের জন্য অ্যান্টিরিংকেল ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।

ময়েশ্চারাইজিং টিপস

* গোসল করার পর, ত্বকে ভেজা ভাব থাকতে থাকতেই তেল বা ক্রিম লাগানোর অভ্যাস করুন। প্রতিদিন সকালে ও রাত্রে দুবার ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। ভেজা ত্বকে ময়েশ্চারাইজার লাগালে ত্বকের অতিরিক্ত ময়েশ্চার বজায় থাকে।

* ময়েশ্চারাইজার লাগানোর পর সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করুন। বাইরে বের হওয়ার কমপক্ষে ১৫ মিনিট আগে ময়েশ্চারাইজার ও সানস্ক্রিন লোশন লাগান।

* ক্লেনজিং, টোনিংয়ের পর অবশ্যই ময়েশ্চারাইজিং দিতে হবে।

হাত-পায়ের যত্নে ময়েশ্চারাইজার

* গোলাপের পাপড়ি, ঈষদুষ্ণ পানি, আমন্ড অয়েল, রোজ অয়েল, ভিটামিনই অয়েল, কোকোয়া বাটার মিশিয়ে অল্প আঁচে গরম করুন। প্রতিদিন রাতে হাত ও পায়ে ম্যাসাজ করুন।

সমস্যাপ্রবণ ত্বকের জন্য ময়েশ্চারাইজার

* তিলের তেল রোদে পোড়া ত্বকের জন্য খুবই উপকারী ময়েশ্চারাইজার। তিলের তেল ন্যাচারাল সান ব্লকার ও ত্বক মসৃণ রাখে। বলিরেখা সাধারণত শুষ্ক ত্বকে পড়ে। সেই কারণে এই ত্বকের বিশেষ যত্নের প্রয়োজন। এই ত্বকে ঘি ও আমন্ড একসঙ্গে মিশিয়ে বলিরেখার উপর ম্যাসাজ করুন প্রতিদিন আধ ঘণ্টা করে। তারপর আমন্ড বাটা, আমলা বাটা, মধু একসঙ্গে মিশিয়ে ভাব নষ্ট হয়ে গেলে হালকা হাতে আমন্ড অয়েল দিয়ে আপলিফটিং পদ্ধতিতে ২০ মিনিট ম্যাসাজ করুন।

ত্বকের জন্য বিশেষ ময়েশ্চারাইজার

* তৈলাক্ত ত্বকের জন্য টমেটোর রস ভালো ময়েশ্চারাইজার। খোলা লোমকূপের সমস্যা প্রতিরোধ করে।

* গোলাপ জলের সঙ্গে সামান্য চন্দন গুঁড়া মিশিয়ে বোতলে ভরে রাখুন। গোসলের পরে লাগান।

* লেটুস পাতার রস, মধু, লেবুর রস মিলিয়ে ক্লেনজিং, টোনিংয়ের পর নিয়মিত লাগান।

* ভিনিগার, তেল, মধু মিশিয়ে গোসলের পর ম্যাসাজ করুন।

* গ্রিন টি-এর লিকার, বাদাম তেল, পানি গরম করে নিন। ঠাণ্ডা হলে ভিটামিই ই-অয়েল মেশান। এবং ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ব্যবহার করুন।