টমেটো শুধু সবজি নয়,কঠিন রোগের নিরামক ও প্রতিরোধকও!!!

সাধারণত যে কোনো সবজি থেকেই আপনি পেতে পারেন অনেক বড় রকমের উপকার।আমাদের আশেপাশেই রয়েছে এরকম অনেক সবজি।কিন্তু আমরা তার গুণাগুণ সম্পর্কে অবগত নই বলে তার থেকে সঠিক উপকারটি নিতে পারছি না।আর এমনি একটি সবজি হলো টমেটো।ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ফুড সায়েন্স অ্যান্ড নিউট্রিশন এ প্রকাশিত এক গবেষণার রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০০ গ্রাম কাঁচা টমেটো প্রতিদিন খেতে পারলে টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের হৃদরোগের যে ঝুঁকি থাকে তা কমাতেও টমেটো সাহায্য করে।

যেসব রোগ নির্মূলে টমেটোর জুড়ি নেই:

১.উচ্চরক্তচাপ কমাতে:উচ্চ রক্তচাপ কমাতে পারে টমেটো। এতে ভিটামিন সি আছে, যা রক্তচাপ কমায় এবং এতে থাকা পটাশিয়াম রক্তে জলীয় অংশ নিয়ন্ত্রণ করে। এতে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় রক্তপ্রবাহ বাড়ায়।

২.অ্যান্টিবডি বৃদ্ধিতে টমেটো: অবসাদ ও সর্দি মোকাবিলা করতে পারে টমেটো। টমেটোতে থাকা বিটা ক্যারোটিন শরীরে ভিটামিন এ হিসেবে রূপান্তরিত হয়। এতে শরীর সুরক্ষিত থাকে। যেসব ভাইরাস সর্দি-কাশি সৃষ্টি করে, তাদের বিরুদ্ধে লড়তেও সাহায্য করে ক্যারোটিন। সাইট্রিক ও ম্যালিক অ্যাসিডের কারণে টমেটোর কিছুটা টক স্বাদ হয়। এতে গ্যাস্ট্রিক মিউকোসা সুরক্ষিত থাকে। পাকস্থলী সক্রিয় থাকে এবং বিপাকীয় কার্যক্রম বাড়ে

৩.ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে টমেটোর জাদু:ডায়াবেটিস রোগীদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই জরুরী। আর তাই ওজন কম রাখতে টমেটো তাদের জন্য খুবই উপকারি একটি খাবার। টমেটো অনেক পুষ্টি গুন সম্পন্ন একটি সবজি। আমরা জানি ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের অসুস্থতা বাড়িয়ে তোলে।রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে দেহে কি ধরণের সমস্যা হয় তা সম্পর্কে আমরা কমবেশি সকলেই অবগত। সঠিক খাদ্যভ্যাস ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
টমেটোয় রয়েছে প্রচুর পটাসিয়াম, ভিটামিন সি ও লাইকোপিন। লাইকোপিন একটি রঞ্জক পদার্থ যার কারণে টমেটো লাল দেখায়। এই লাইকোপিন হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। তা ছাড়া চোখের স্বাস্থ্য ভাল রাখতেও কাজ করে। তাছাড়া আরও একটি কারণে টমেটো ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর জন্য উপকারী।কারণ, এতে রয়েছে খুব সামান্য পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা। ডায়াবেটিসের রোগীদের শর্করার জাতীয় খাবারের বিষয়ে বেশি সতর্ক থাকতে হয়। শর্করা তাদের ব্লাড সুগারের মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দেয়। টমেটোতে শর্করা কম এবং এ কারণেই ডায়াবেটিস রোগীরা তা খেতে পারেন নির্দ্বিধায়।

৪.এন্টিএজিং এর ওষুধ হিসেবে টমেটো: টমেটোতে আছে বয়স প্রতিরোধী বিশেষ প্রভাব। শরীরের ত্বক কুঁচকে যাওয়া, ভাঁজ পড়া বা বলিরেখা পড়া দূর করতে পারে টমেটোতে থাকা লাইকোপিন। তথ্যসূত্র: ইয়ুথ হেলথ ম্যাগ ও টাইমস অব ইন্ডিয়া।বুড়িয়ে যাওয়া কিংবা জীবনযাপন-সম্পর্কিত নানা সমস্যা সমাধান করতে পারে টমেটো। টমেটোর রং তৈরির জন্য দায়ী লাইকোপিন নামের একটি উপাদান। লাইকোপিন এক ধরনের ক্যারোটিনয়েড, যা তরমুজেও থাকে। এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে বিটাক্যারোটিনের দ্বিগুণ প্রভাব ফেলে। এ ছাড়া ভিটামিন ই-এর চেয়ে শতগুণ কার্যকর। এই লাইকোপিনের জন্য শরীরে ক্যানসার বাসা বাঁধতে পারে না। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, বিটা-ক্যারোটিন ও রুটিন নামের তিন ধরনের উপাদান থাকায় রক্তের বাজে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে।

৫.ক্যান্সার প্রতিরোধে :এক কাপ বা ১৮৯ গ্রাম টমেটোতে আছে ৩৮ শতাংশ ভিটামিন সি, ৩০ শতাংশ ভিটামিন এ, ১৮ শতাংশ ভিটামিন কে, ১৩ শতাংশ পটাশিয়াম ও ১০ শতাংশ ম্যাঙ্গানিজ। এ ছাড়াও আছে ভিটামিন ই, লৌহ, ফলেট ও আঁশ। এত গুণের কারণে এই মৌসুমে প্রতিদিন সালাদের সঙ্গে টমেটো খেতে পারেন। এ ছাড়াও টমেটোর এমন কিছু গুণ আছে যা বুড়িয়ে যাওয়া ঠেকাতে পারে। শরীরকে রোগ প্রতিরোধক্ষম করে তোলে টমেটো। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় টমেটোর এসব কার্যক্ষমতার কথা বলা হয়েছে। গবেষকেরা বলেছেন, টমেটোতে আছে দারুণ অ্যান্টি-অক্সিডেটিভ প্রভাব, যা কোষকে বুড়ো হতে দেয় না। এ ছাড় নানা রকম ক্যানসার প্রতিরোধ করতে পারে টমেটো।